আপনিও কি স্ট্রোক করার ঝুঁকিতে আছেন?

বিশ্বের সবচেয়ে কমন রোগের মধ্যে স্ট্রোক অন্যতম। যা একবার অবহেলা করলে জীবন মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই আমাদের সকলেরই স্ট্রোক সম্মন্ধে ধারণা রাখা উচিৎ। স্ট্রোকের কোন কোন লক্ষণ দেখা গেলে তৎক্ষণাক ডাক্তারের কাছে নিতে হবে এবং ঝুঁকি এড়ানোর উপায় কি সেই বিষয়েই আলোচনা করবো।

তাহলে প্রথমেই জেনে নেই স্ট্রোক কি?

সাধারণ ভাষায় স্ট্রোক বলতে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল ব্যঘাত ঘটাকেই বুঝানো হয়। মস্তিষ্কের কোনো অংশে রক্ত সঞ্চালনের ঘাটতি দেখা দিলে সেই অংশের কোষ কার্যক্ষমতা হারায়। আর এই অবস্থাকেই স্ট্রোক বলা হয়।

স্ট্রোক মূলত ৩ ধরনের

১. রক্তক্ষরণ জনিত বা হেমোরেজিক স্ট্রোক। যা মস্তিষ্কের রক্ত সরবরাহকারী রক্তনালী ফেটে গিয়ে রক্তক্ষরণ হওয়াকে বুঝায়।

২. ইস্কেমিক স্ট্রোক (Ishchaemic Stroke). এটিতে রক্তক্ষরণ হয়না কিন্তু রক্ত জমাট বেঁধে মস্তিষ্কের রক্ত প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়।

৩. Transient Ishchaemic Attack (TIA) বা মিনি স্ট্রোক বা মাইল্ড স্ট্রোক যা সাময়িক সময়ের জন্য মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এটি ১৫ সেকেন্ড থেকে ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।

কি কি লক্ষণ দেখলে বুঝা যাবে এটি স্ট্রোক?

< হঠাৎ মাথা ঘুরিয়ে পড়ে যাওয়া এবং অজ্ঞান হয়ে যাওয়া

< মুখের এক পাশ বাঁকা হয়ে যাওয়া

< চোখের পাতা পড়ে যাওয়া

< কথা জড়িয়ে আসা

< অন্যের কথা বুঝতে না পারা

< শরীরের যেকোনো এক পাশ দুর্বল বা অবশ হয়ে যাওয়া।

< কাউকে চিনতে না পারা এবং আবল তাবল কথা বলা

< মাথা ব্যথা ও বমি

< খিচুনি

স্ট্রোক সনাক্তকরণ : –

সিটি স্ক্যান অফ ব্রেইন (CT Scan of Brain) স্ট্রোক সনাক্তকরণে সর্বপ্রথম মাধ্যম। এই পরীক্ষার মাধ্যমেই কোন ধরনের স্ট্রোক হয়েছে তা সনাক্ত করা যায়। এরপর স্ট্রোক ধরা পড়লে অন্যান্য পরীক্ষা নিরীক্ষা করানো হয়।

স্ট্রোকের ঝুঁকিগুলো কি কি?

< উচ্চ রক্তচাপ

< ডায়াবেটিস মেলাইটাস

< রক্তে কলেস্টেরল বৃদ্ধি

< বয়স অর্থাৎ ৪০ বছর এর ওপরে মানুষের স্ট্রোক হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে

< পারিবারিক ইতিহাস অর্থাৎ পরিবারে যদি কারোর স্ট্রোক হয়ে থাকে।

< অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যাওয়া

< ধুমপান করা

স্ট্রোকের ২ ধরনের চিকিৎসা হতে পারে।

১. Emergency বা তৎক্ষণাক চিকিৎসা :

অর্থাৎ রোগী যদি অজ্ঞান হয়ে যায় বা খিচুনি হয় তখন সাথে সাথে যে চিকিৎসা দেওয়া হয় সেটিই Emergency চিকিৎসা।

২. Secondary বা মাধ্যমিক চিকিৎসা হচ্ছে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর রোগীকে ঔষধের মাধ্যমে যে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

< ফিজিওথেরাপি দেওয়া

< Bed Sore বা সুয়ে থাকতে থাকতে পিছনে যেন ঘা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা।

< ঔষধের মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা।

< স্ট্রোকের ধরণ বুঝে চিকিৎসা দেওয়া।

স্ট্রোক কখনো হালকা ভাবে নেওয়া উচিত না। আপনার মধ্যে যদি স্ট্রোকের একটা হলেও ঝুঁকি থেকে থাকে তাহলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।